একটি প্রজন্মের স্বপ্ন

২০২৫ সাল দেশের জন্য অনেক বড় বার্ষিকীর বছর।

১৯৪৫ সালের ২রা সেপ্টেম্বর ভিয়েতনাম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পরপরই, তরুণ রাষ্ট্রটিকে ফরাসি উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে ৯ বছরের প্রতিরোধ যুদ্ধে নামতে হয়। তারপর, ১৯৫৪ সালের জুলাই মাসে জেনেভা চুক্তির পর, ভিয়েতনাম ১৭তম সমান্তরালে বিভক্ত হয় এবং সমগ্র দেশ আমেরিকান সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে একটি দীর্ঘ পদযাত্রায় প্রবেশ করে যা ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়। সেই সময়ে, যদিও ১৯৭৩ সালে প্যারিস চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যা শান্তির সুযোগ খুলে দিয়েছিল, তবুও ৩০শে এপ্রিল, ১৯৭৫ সালের মধ্যে যুদ্ধের প্রকৃত অবসান ঘটেনি, শান্তির যুগের সূচনা হয়েছিল - জাতীয় ঐক্য!

পঞ্চাশ বছর কেটে গেছে, পুনর্গঠিত পরিবারগুলি "উত্তরের দিন এবং দক্ষিণের রাত" কাটিয়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি সময়, অভিবাসী পরিবারগুলি যারা "শীতের স্মৃতিচারণ" ভুলতে পারেনি... আমার প্রজন্ম যুদ্ধ এবং ভর্তুকি সময়কালে জন্মগ্রহণ এবং বেড়ে উঠেছে, এবং সেই সময়কালে পরিণত হয়েছে যখন দেশ "খোলা" হয়েছিল এবং বিকাশ শুরু করেছিল, তাই আমাদের গভীরতম স্মৃতি হল "দেশ পুনরায় একত্রিত হয়েছিল"। সেই দিনটি ছিল যেদিন এত মানুষ তাদের স্বদেশে ফিরে এসেছিল, এত পরিবার পুনরায় একত্রিত হয়েছিল, শান্তির সেই প্রথম দিনগুলিতে এত হাসি। কিন্তু যারা কখনও ফিরে আসবে না, যারা বিভিন্ন কারণে চলে যাবে তাদের জন্যও অনেক অশ্রু ঝরেছিল...

তবে, যুদ্ধ যতদিনই স্থায়ী হোক না কেন, এটি কেবল একটি অস্বাভাবিক ঘটনা যা অবশ্যই শেষ হবে! একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হল সকলের জন্য শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক জীবনের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। একীকরণের পর প্রথম বছরগুলিতে, যদিও সমস্যাগুলি স্তূপীকৃত হয়েছিল, মানুষের হৃদয় অশান্ত ছিল, তবুও "শান্তি ও ঐক্যের" জীবন প্রতিটি ব্যক্তির কাছে এবং সমগ্র দেশের কাছে সবচেয়ে অর্থবহ ছিল।

"লেজেন্ডারি ট্রেন" সঙ্গীতের মাধ্যমে ২০২৪ সালের হো চি মিন সিটি নদী উৎসবের সূচনা। ছবি: হোয়াং ট্রিউ

ভিয়েতনাম যুদ্ধের বাস্তবতা দেখিয়েছে যে যুদ্ধে লিপ্ত একটি দেশ সমগ্র বিশ্বে অস্থিতিশীল প্রভাব ফেলবে, একটি "ছোট" যুদ্ধ কেবল "অভ্যন্তরীণ" দেশগুলির জন্যই দীর্ঘমেয়াদী পরিণতি বয়ে আনতে পারে না। এটি বিশ্বব্যাপী বড় পরিবর্তনও আনতে পারে। প্রতিটি দেশ শান্তিপূর্ণভাবে উন্নয়নশীল, অন্য দেশের ক্ষতি না করে বা আক্রমণ না করে, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সহযোগিতাকারী দেশগুলি বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে।

শান্তি হলো সামাজিক সম্প্রীতি, মানবতা এবং সংঘাতহীন অবস্থা। শান্তি হলো সেই সুতো যা মানুষ এবং সম্প্রদায়কে সংযুক্ত করে কারণ মানুষের কাছে বস্তুগত ও আধ্যাত্মিক জীবনের সকল দিক উদ্ভাবন, সৃষ্টি, বিকাশ, সংস্কৃতির বোধগম্যতা বৃদ্ধি এবং সকল দেশের সাথে সহযোগিতার স্থিতিশীল পরিবেশ রয়েছে। শান্তি আঞ্চলিক ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক , সামাজিক এবং মানবিক উন্নয়নকে সহজতর করে।

যে প্রজন্মের ভয়াবহ যুদ্ধের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা ১৯৭৫ সাল থেকে প্রতিধ্বনিত "শান্তি" শব্দ দুটির অর্থ গভীরভাবে অনুভব করে। দেশের ঐক্যের জন্য, সমগ্র জাতির সম্প্রীতি ও সংহতির জন্য শান্তিও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। যে দেশ ২০০ বছরেরও বেশি ইতিহাস "ভিতরে এবং বাইরে", প্রায় ১০০ বছর ধরে উত্তর - মধ্য - দক্ষিণে বিভক্ত, ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে বিভক্ত... তারা একীকরণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আরও বেশি সচেতন, যেমন রাষ্ট্রপতি হো চি মিনের "১৯৬৯ সালের বসন্ত" কবিতায় বলা হয়েছে।

এটা বলা যেতে পারে যে বিদেশী আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের জাতির যুদ্ধের সর্বোচ্চ লক্ষ্য হল দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা, শান্তির সাথে সাথেই ঐক্যবদ্ধ হওয়াও সত্যিকার অর্থে সম্পূর্ণ! ঐক্যবদ্ধ হওয়া কেবল ভূখণ্ড এবং আঞ্চলিক জলসীমার অখণ্ডতা নয়, বরং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, দেশে এবং বিদেশে একশ মিলিয়নেরও বেশি ভিয়েতনামী জনগণের ঐক্যমত্য, যা একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়সঙ্গত সমাজ, একটি সমৃদ্ধ, সুখী মানুষ, "বিশ্বশক্তির সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ানো" একটি শক্তিশালী দেশ গড়ে তোলার সাধারণ লক্ষ্য ভাগ করে নেয়।

১৯৭৫ সালের ৩০শে এপ্রিল দুপুরে, পুরো রাজধানী হ্যানয় "দক্ষিণকে মুক্ত করার" আনন্দে যোগ দিতে রাস্তায় নেমে আসে, লাউড স্পিকারে "যেন আঙ্কেল হো মহান বিজয় দিবসে এখানে আছেন" গানটি গেয়ে। ১৯৭৫ সালের মে মাসের পর, আমি হ্যানয় ছেড়ে সাইগনের উদ্দেশ্যে রওনা হই, আমার মায়ের এজেন্সি বাসে করে ক্যাডারদের দক্ষিণে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমার পরিবার ফু নুয়ানে আমার দাদা-দাদীর বাড়িতে ফিরে আসে এবং তখন থেকেই সেখানেই বসবাস করে আসছে।

পঞ্চাশ বছরের শান্তির পরও, শহরটি যতই পরিবর্তিত হোক না কেন, হো চি মিন সিটির ভূ-সাংস্কৃতিক এবং ভূ-অর্থনৈতিক অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়নি। নাহা বে থেকে, যেখানে দুটি মহান নদী ডং নাই - সাইগন মিলিত হয়, এটি একটি "স্বর্গ-প্রেরিত" স্থান যা লোকেরা গিয়া দিন দুর্গ এবং তারপরে সাইগন শহর নির্মাণের জন্য "নির্বাচিত" করেছিল, যা দক্ষিণ অঞ্চলের জন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য এবং পরিচয় তৈরি করেছিল।

আজ সেই অবস্থান কীভাবে বজায় রাখা হয়েছে? হো চি মিন সিটি এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ট্র্যাফিক রুটের "কেন্দ্রীয় সংযোগস্থল": মধ্য অঞ্চল, উত্তর, পূর্ব এবং মধ্য উচ্চভূমি, পশ্চিমে - মেকং ডেল্টা। সেখান থেকে, আপনি মূল ভূখণ্ডের গভীরে অনেক এশিয়ান দেশ এবং তার বাইরেও যেতে পারেন... কেবল সড়ক সংযোগের অবস্থানেই নয়, দক্ষিণের নগর এলাকার নদীপ্রকৃতিও হো চি মিন সিটিতে উচ্চ স্তরে উন্নীত।

এটি একটি সমুদ্রমুখী শহর, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় একটি আধুনিক বন্দর ব্যবস্থায় প্রতিফলিত হয়। বর্তমানে, দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে বিদ্যমান বন্দর ব্যবস্থার পাশাপাশি, ভবিষ্যতে, ক্যান জিও ট্রানজিট বন্দর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি নতুন কেন্দ্র হবে। সাইগন - হো চি মিন সিটি তার উন্মুক্ততা, নমনীয়তা, উদ্ভাবন এবং বিশ্বের নতুন অর্থনৈতিক - সাংস্কৃতিক - বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অর্জনের গ্রহণযোগ্যতা এবং বিকাশ অব্যাহত রেখেছে।

হো চি মিন সিটি বর্তমানে সাইগন নদীর উভয় তীর উন্নয়নের জন্য প্রকল্প পরিচালনা করছে, যার লক্ষ্য সম্প্রদায়ের জন্য টেকসই সুবিধার সর্বোচ্চ লক্ষ্য। সাইগন নদীকে শহরের ইতিহাসের প্রবাহের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এটি একসময় সেই জায়গা ছিল যেখানে বেন থান মার্কেট, বাখ ড্যাং ওয়ার্ফ, নগুয়েন হিউ, হাম এনঘি, ডং খোই, লে ডুয়ান স্ট্রিট... এর মতো প্রতীক দিয়ে শহরটি প্রতিষ্ঠিত এবং নির্মিত হয়েছিল... সমুদ্রের আরও কাছে, সাইগন নদী যুদ্ধের সময় ভয়াবহ "রুং স্যাক যুদ্ধক্ষেত্র" এর প্রমাণ বহন করে। অথবা "ওয়ার্ল্ড বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ" হল ম্যানগ্রোভ বন পুনঃরোপনের জন্য কষ্টের সময়ের চিহ্ন, যা সেই সময়ে উপকূলীয় জেলার সমুদ্রে যাওয়ার পথ খুলে দেয়।

"একই নদীতে কেউ দুবার স্নান করে না", কারণ প্রতিটি নদীই "স্থির পুকুর" হতে অস্বীকৃতি জানায়। সাইগন নদী, দং নাই নদী এবং শহরের খাল পরিষ্কার করা "সাইগন - হো চি মিন সিটির মানুষদের" চিন্তাভাবনা, ইচ্ছা এবং কর্মকেও পরিষ্কার করে - যারা অতীতকে তাদের আটকে রাখতে দেয় না বরং চিন্তা করার, করার সাহস করে, দায়িত্ব নেওয়ার সাহস করে।

এই শহরটি সর্বদা জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রবাহের সঙ্গমস্থল। ২০২৫ সালে - একীকরণের ৫০ বছর, এবং মাত্র ২০ বছরে - ২০৪৫ সালে - দেশটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের এক শতাব্দী পূর্ণ করবে, হো চি মিন সিটি অবশ্যই একটি আধুনিক - সভ্য শহর হয়ে উঠবে, শান্তি - সম্প্রীতির প্রতীক। আমি কত কামনা করি!

হো চি মিন সিটি এমন একটি জায়গা যেখানে সমগ্র দেশকে "সংস্কার" করতে হয় এমন বাস্তবতা কেন্দ্রীভূত। এটি এমন একটি জায়গা যেখানে "ভালো জমি পাখিদের আকর্ষণ করে", সারা দেশের বাসিন্দারা এই শহরের পরিবর্তনে অবদান রাখতে এখানে আসেন।

সূত্র: https://nld.com.vn/uoc-mong-cua-mot-the-he-196250121135103387.htm