আগস্ট বিপ্লবে জাতীয় সংহতির শক্তিকে সংগঠিত করা

১৯৪৫ সালের আগস্ট বিপ্লব ছিল জনগণের ঐক্যমতের বিপ্লব, যা সংগঠিত ও নেতৃত্বাধীন ছিল পার্টির নেতৃত্বে, হো চি মিনের আদর্শ দ্বারা পরিচালিত। নতুন যুগের দ্বারপ্রান্তে, মহান জাতীয় ঐক্য ব্লকের শক্তি গঠন ও প্রচারের শিক্ষা স্বীকৃত এবং উন্নত করা হয়েছে।

২৮শে জানুয়ারী, ১৯৪১ তারিখে, নেতা নগুয়েন আই কোক দেশে ফিরে আসেন এবং সরাসরি বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন। ১৯৪১ সালের মে মাসে, তিনি ক্ষমতা দখলের দিকে অগ্রসর হওয়া জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে ভিয়েতনামী বিপ্লবের কৌশল এবং কৌশল সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ৮ম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন। ১৯৪১ সালের ১৯শে মে, প্যাক বো পাহাড়ি এলাকার মাঝখানে, নগুয়েন আই কোকের উদ্যোগে, পার্টির ৮ম কেন্দ্রীয় সম্মেলন ভিয়েতনাম স্বাধীনতা লীগ (সংক্ষেপে ভিয়েত মিন ফ্রন্ট) প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে স্পষ্টভাবে ফরাসিদের বিরুদ্ধে লড়াই, জাপানিদের বিতাড়িত করা এবং জাতির জন্য স্বাধীনতা ও স্বাধীনতা অর্জনের উদ্দেশ্য উল্লেখ করা হয়।

১৯৪৫ সালের ২রা সেপ্টেম্বর, হ্যানয়ের বা দিন স্কোয়ারে, রাষ্ট্রপতি হো চি মিন "স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র" পাঠ করেন, যা ভিয়েতনামের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের জন্ম দেয়। ছবি: আর্কাইভ

ভিয়েত মিন ফ্রন্ট জনগণের কাছে ঘোষণা করে: "VND.L.D.M-এর উদ্দেশ্য হল আমাদের স্বদেশীদের স্বাধীনতা এবং সুখ বয়ে আনা, এই ইন্দোচীন ভূখণ্ডের নিপীড়িত জাতিগত গোষ্ঠীগুলিকে মুক্ত করা" (1)।

সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য, ভিয়েত মিন "ধর্ম, দল, রাজনৈতিক প্রবণতা বা শ্রেণী নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার পক্ষে, দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ফরাসি ও জাপানিদের বিতাড়িত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করার পক্ষে" (2)।

৮ম কেন্দ্রীয় সম্মেলনের প্রস্তাবের চেতনা এবং জাতীয় মুক্তির জন্য হো চি মিনের বিপ্লবী আদর্শ ভিয়েত মিন কর্মসূচিতে স্থানান্তরিত হয়েছিল রাজনীতি, অর্থনীতি , সংস্কৃতি এবং সমাজের উপর প্রগতিশীল নীতিমালার মাধ্যমে, যা সকল শ্রেণীর মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে, মর্যাদা এবং রাজনৈতিক প্রবণতা নির্বিশেষে, কিন্তু একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক এবং সমৃদ্ধ ভিয়েতনামের জন্য সাধারণ আকাঙ্ক্ষার সাথে।

১৯৪৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ভং লা (হ্যানয়) তে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পার্টি স্ট্যান্ডিং কমিটির সম্মেলনে দেশের ভেতরে এবং বাইরের সকল দল এবং দেশপ্রেমিক গোষ্ঠীর সাথে সংহতির নীতি প্রস্তাব করা হয় যারা ভিয়েত মিন ফ্রন্টে যোগ দেয়নি, শ্রমিক, কৃষক, সৈনিক, যুবক, মহিলা, বুর্জোয়া, দেশপ্রেমিক জমিদার, জাতিগত সংখ্যালঘু এবং বিদেশী চীনাদের একত্রিত করার কাজকে ত্বরান্বিত করা হয় এবং বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিবিদদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য শহরগুলিতে জাতীয় মুক্তি সাংস্কৃতিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

ফ্রন্টকে সুসংহত ও বিকশিত করার নীতি হল: "আমাদের সর্বদা শ্রমিক ও কৃষকদের সংগঠনগুলিকে সুসংহত ও বিকশিত করতে হবে কারণ তারা জাপান ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় ফ্রন্টের মেরুদণ্ড। কিন্তু একই সাথে, যুব, মহিলা এবং বুর্জোয়া, জমিদার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইত্যাদির জাতীয় মুক্তি সংগঠনগুলিকে বিকশিত করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে..."(3)।

"জাতীয় মুক্তি" সমগ্র জাতির সাধারণ স্লোগানে পরিণত হয়েছে। "জাতীয় মুক্তি" হল ভিয়েত মিনের সদস্য সংগঠনগুলির নাম: জাতীয় মুক্তি কর্মী, জাতীয় মুক্তি কৃষক, জাতীয় মুক্তি যুব, জাতীয় মুক্তি নারী, জাতীয় মুক্তি সংস্কৃতি, ইত্যাদি। পার্টির নেতৃত্বে, ভিয়েত মিন ফ্রন্ট সকল শক্তি, সংগঠন এবং ব্যক্তি, সমাজের সকল শ্রেণীকে একত্রিত করেছে যাতে তারা "একসাথে মুক্তি এবং বেঁচে থাকার জন্য" সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করতে পারে।

হেরে যাওয়া পরিস্থিতিতে, ১৯৪৫ সালের ৯ মার্চ, জাপান ইন্দোচীনকে একচেটিয়া করার জন্য ফ্রান্সের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান চালায়। "জাপানি এবং ফরাসিরা একে অপরকে গুলি করছে" যখন এখনও চলছিল, তখন কেন্দ্রীয় পার্টির স্থায়ী কমিটি (বর্ধিত) বৈঠক করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে একটি বিদ্রোহের সময় ঘনিয়ে আসছে - "ভালো সুযোগগুলি একটি বিদ্রোহের পরিস্থিতি দ্রুত পরিপক্ক হতে সাহায্য করছে"।

সম্মেলনটি তাৎক্ষণিকভাবে ১২ মার্চ, ১৯৪৫ তারিখে জাপানি ও ফরাসি যুদ্ধ এবং আমাদের কর্মকাণ্ডের উপর নির্দেশিকা জারি করে। পরিস্থিতির উন্নয়নের মূল্যায়ন এবং পূর্বাভাসের ভিত্তিতে, কেন্দ্রীয় পার্টির স্থায়ী কমিটি "সাধারণ বিদ্রোহের ভিত্তি হিসেবে দেশকে বাঁচাতে একটি শক্তিশালী জাপান-বিরোধী আন্দোলন শুরু করার" পক্ষে মত দেয়। সংগ্রামের আহ্বানের স্লোগান ছিল: জাপানি ফ্যাসিস্টদের তাড়িয়ে দাও, জনগণের একটি বিপ্লবী সরকার প্রতিষ্ঠা করো।

১৯৪৫ সালের ৬ জুন, ভিয়েত মিন জেনারেল স্টাফ কনফারেন্সের সিদ্ধান্ত অনুসারে, ছয়টি প্রদেশে অনেক যুদ্ধক্ষেত্র নিয়ে ভিয়েত বাক মুক্তি অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়: কাও বাং, বাক কান, ল্যাং সন, হা গিয়াং, টুয়েন কোয়াং, থাই নগুয়েন এবং বাক গিয়াং, ভিন ইয়েন, ফু থো, ইয়েন বাই প্রদেশের কিছু এলাকা।

মুক্ত অঞ্চলে, ভিয়েত মিন ফ্রন্ট ধীরে ধীরে জনগণের সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করে। মুক্ত অঞ্চলের বিপ্লবী কমিটি এবং জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কমিটিগুলি "ভিয়েত মিনের দশটি মহান নীতি" বাস্তবায়নের আয়োজন করে। কাও বাং ঘাঁটি এলাকার "সম্পূর্ণ কমিউন", "সম্পূর্ণ ক্যান্টন" এবং "সম্পূর্ণ জেলা" গুলিতে গেরিলা দলগুলি সক্রিয় ছিল। ভিয়েতনাম প্রচারণা মুক্তি বাহিনী এবং জাতীয় মুক্তি বাহিনী মুক্ত অঞ্চল সম্প্রসারণের জন্য জাপানি সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ করে এবং অনেক জায়গায় বিজয় অর্জন করে।

বদ্বীপের গ্রামীণ এলাকায়, ধান উপড়ে ফেলা এবং ফসল ধ্বংস করে ক্যাস্টর অয়েল লাগানোর বিরুদ্ধে অনেক কৃষক সংগ্রাম শুরু হয়। শহরগুলিতে, বিশেষ করে হ্যানয়ে, পরিস্থিতি আরও জরুরি হয়ে ওঠার সাথে সাথে বিপ্লবী পরিবেশ আরও তীব্রতর হতে থাকে, বিশেষ করে ফরাসিদের বিরুদ্ধে জাপানি অভ্যুত্থানের পর। উচ্চ মজুরির দাবিতে শ্রমিকদের সংগ্রাম, মারধরের বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং তরুণ ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের সংগ্রামও আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ভিয়েত মিন ফ্রন্টের মধ্যে সমবেত জাতীয় মুক্তি সংগঠনগুলি বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণকে আকর্ষণ করে।

সাইগনের ভ্যানগার্ড যুব সংগঠন এবং হিউয়ের ভ্যানগার্ড যুব সংগঠনগুলি বিদ্রোহের আগে স্বেচ্ছায় ভিয়েত মিনে যোগ দিয়েছিল, পার্টির নেতৃত্বে কাজ করছিল। পুতুল সরকারের বেসামরিক কর্মচারী, সৈন্য এবং পুলিশ বিভ্রান্ত এবং দ্বিধাগ্রস্ত ছিল, এবং তাদের মধ্যে কেউ কেউ বিপ্লবের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। স্বেচ্ছাসেবক প্রচার দলের কার্যকলাপ ক্রমশ উত্তেজনাপূর্ণ এবং সাহসী হয়ে ওঠে, যা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক অনুরণন সৃষ্টি করে, বিদ্রোহের প্রস্তুতির উত্তপ্ত দিনগুলিতে বিপ্লবী চেতনা জাগিয়ে তোলে। জাপানি অভ্যুত্থানের পর বিচ্ছিন্ন শহরাঞ্চলে একটি বিপ্লবী পরিবেশে পুতুল সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয় যা ধীরে ধীরে "উত্তপ্ত" হচ্ছিল।

পার্টি সুযোগটি দ্রুত কাজে লাগায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমগ্র জনগণকে বিদ্রোহে জেগে ওঠার জন্য সংগঠিত করে। আগস্টের সাধারণ বিদ্রোহ দ্রুত দেশব্যাপী সম্পূর্ণ সাফল্য অর্জন করে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তি জাতির জন্য স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের অলৌকিক ঘটনা তৈরি করে।

১৯৪৫ সালের আগস্টের সাধারণ বিদ্রোহের বিজয় সম্পর্কে লেখার সময়, ফরাসি ইতিহাসবিদ ফিলিপ ডেভিলার্স মন্তব্য করেছিলেন: "এটি দেশের জীবনের সকল ক্ষেত্রে ভিয়েত মিনের যৌক্তিক ফলাফল"[4]।

ভিয়েত মিন ফ্রন্টের মাধ্যমে, পার্টি জাতীয় মুক্তি বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে সমাজে তার ভূমিকা এবং প্রভাবকে তুলে ধরেছে। ভিয়েত মিন ফ্রন্ট ভিয়েতনামের জনগণের আগস্ট বিপ্লবের মহান বিজয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। সেই বিজয় হো চি মিনের মহান সংহতির আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীতে ভিয়েতনামের জনগণের ঐতিহাসিক মাইলফলকগুলি মহান জাতীয় সংহতি ব্লকের শক্তির অর্জনকে চিহ্নিত করে। সাধারণ সম্পাদক টো লাম নিশ্চিত করেছেন: "আমাদের আজ যে ভবিষ্যত, সম্ভাবনা, অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক মর্যাদা রয়েছে তা মূলত মহান জাতীয় সংহতি ব্লকের শক্তির কারণেই।"

নতুন চ্যালেঞ্জের সাথে নতুন প্রেক্ষাপটে ব্লকের শক্তিকে নতুন স্তরে উন্নীত করা প্রয়োজন। অতীতের সাফল্য থেকে প্রাপ্ত মহান শিক্ষা এখনও উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায়। সাধারণ সম্পাদক টু ল্যাম স্পষ্টভাবে নীতিবাক্যটি বলেছেন: "আমরা মহান জাতীয় ঐক্যের শক্তি বজায় রাখতে এবং প্রচার করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, এটিকে "উৎস", "লাল সুতো" হিসাবে বিবেচনা করে, নিশ্চিত করে যে পার্টি এবং রাষ্ট্রের সমস্ত নির্দেশিকা এবং নীতিগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, ধারাবাহিকভাবে, কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং জনগণের সমস্ত বৈধ আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোত্তমভাবে পূরণ করে।" অতীতে মহান জাতীয় ঐক্যের সাধারণ বিষয় ছিল স্বাধীনতা এবং স্বাধীনতা। আজ মহান জাতীয় ঐক্যের সাধারণ বিষয় হল সমৃদ্ধি এবং সুখ। বিশ্বব্যাপী একীকরণের প্রেক্ষাপটে টেকসই উন্নয়নের জন্য দেশপ্রেমের চেতনা, আত্মনির্ভরশীল, আত্মবিশ্বাসী, আত্মনির্ভরশীল, আত্মনির্ভরশীল এবং জাতীয় গর্বের ইচ্ছাকে দৃঢ়ভাবে জাগিয়ে তোলার মূল চাবিকাঠি হল মহান জাতীয় ঐক্য ব্লকের মহান শক্তিকে উন্নীত করা।

----------------------------------------------

[1] ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টি: সম্পূর্ণ পার্টি ডকুমেন্টস, ন্যাশনাল পলিটিক্যাল পাবলিশিং হাউস, হ্যানয়, 2000, খণ্ড 7, পৃষ্ঠা 149।

[2] ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টি: ইবিড, খণ্ড ৭, পৃ. ১৫২।

[3] ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টি: ইবিড, খণ্ড ৭, পৃ. ২৯৪।

[4] পিএইচ. ডেভিলার্স: ১৯৪০ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত ভিয়েতনামের ইতিহাস - সিউইল পাবলিশিং হাউস, প্যারিস, ১৯৫২, পৃ. ১৩২ - আগস্ট ১৯৪৫ সাধারণ বিদ্রোহ বই থেকে উদ্ধৃত - হোয়াং ডিউ জাতীয় মুক্তি যুব ইউনিয়ন - ভিয়েতনাম ঐতিহাসিক বিজ্ঞান সমিতি, শ্রম প্রকাশনা ঘর, হ্যানয়, ১৯৯৯, পৃ. ৪৭৩।

NGO VUONG ANH (nhandan.vn) অনুসারে

সূত্র: https://baogialai.com.vn/huy-dong-suc-manh-dai-doan-ket-toan-dan-toc-trong-cach-mang-thang-tam-post563914.html