এই সময়ে প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করছেন, চাকরি পেতে হলে আপনার কী কী জানা প্রয়োজন?

যদিও চাহিদা ওঠানামার সময় প্রযুক্তি শিক্ষার্থীরা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের মৌলিক বিষয়গুলির উপর দৃঢ় ধারণা আছে এবং AI কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানেন তাদের জন্য চাকরির সুযোগ আসবে।

ক্রাইওভা (রোমানিয়া) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টরাল ট্রেনিং স্কুল "কনস্টান্টিন বেলা" এর পরিচালক অধ্যাপক কস্টিন বাদিকা সম্মেলনে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ছবি: এনজিওসি লং

২৩শে জুলাই, হো চি মিন সিটির তান হাং ওয়ার্ডে (পুরাতন জেলা ৭) টন ডাক থাং বিশ্ববিদ্যালয়, রোক্ল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পোল্যান্ড) এবং চুংবুক জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (কোরিয়া) এর সহযোগিতায়, "ভবিষ্যতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গণনামূলক বুদ্ধিমত্তায় উদ্ভাবন, অগ্রগতি এবং প্রবণতা" প্রতিপাদ্য নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বুদ্ধিমান কম্পিউটিং (ICCIES) বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের যৌথ আয়োজন করে।

প্রযুক্তি শিল্পে কাটছাঁট, কী প্রস্তুতি নেবেন?

অনুষ্ঠানের ফাঁকে থান নিয়েনের সাথে কথা বলতে গিয়ে, ক্রাইওভা বিশ্ববিদ্যালয়ের (রোমানিয়া) ডক্টরাল ট্রেনিং স্কুল "কনস্টান্টিন বেলা" এর পরিচালক এবং রোমানিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজির সহযোগী সদস্য অধ্যাপক কস্টিন বাদিকা বলেন যে শ্রমবাজার সহ অনেক ক্ষেত্রেই এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আকস্মিক পরিবর্তন এনেছে। "বড় এবং ছোট উভয় ব্যবসাতেই প্রযুক্তি শিল্পে মানব সম্পদের চাহিদা হ্রাস পাচ্ছে," তিনি বলেন।

বাস্তব প্রমাণ হিসেবে, Layoffs.fyi প্ল্যাটফর্ম (USA) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত, বিশ্বব্যাপী ১৬৬টি প্রযুক্তি কোম্পানি ছাঁটাইয়ের এই ধারায় অংশগ্রহণ করেছে, যার ফলে ৮০,১৫০ জন কর্মী তাদের চাকরি হারিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে Intel, Meta এবং Google এর মতো বহুজাতিক কর্পোরেশন। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে, ছাঁটাইয়ের সংখ্যা যথাক্রমে ২৬৪,২২০ এবং ১৫২,৯২২ জন। যার মধ্যে, CNBC অনুসারে, এই ছাঁটাইয়ের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল AI কিছু চাকরির পদ প্রতিস্থাপন করতে পারে।

তবে, এর অর্থ এই নয় যে স্নাতক শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের বেকারত্বের মুখোমুখি হতে হবে। অধ্যাপক কস্টিন বাদিকার মতে, তাদের প্রতিযোগিতামূলকতা উন্নত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয়গুলিতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে, যার ফলে সমস্যাটি স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে এবং নিজেদের স্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম হতে হবে। একই সাথে, শিক্ষার্থীদের AI এর সাথে কীভাবে কাজ করতে হয় তা বুঝতে এবং শিখতে হবে, পাশাপাশি জটিল জিনিসগুলি এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করা যেতে পারে, তখন তাদের কাজে আরও সৃজনশীল হতে হবে।

"যতক্ষণ না আমরা মানিয়ে নিতে শিখি, ততক্ষণ সবকিছু ঠিক থাকবে," তিনি জোর দিয়ে বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রে, অধ্যাপক কস্টিন বাদিকা বলেন যে অতীতে স্কুলগুলি প্রায়শই মৌলিক জ্ঞান এবং অত্যন্ত বিশেষায়িত কৌশল শেখানোর উপর জোর দিত, এখন তাদের শিক্ষার্থীদের AI ব্যবহার করার প্রশিক্ষণও দিতে হবে। এটি কেবল আইটি ইঞ্জিনিয়ারদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়, এমনকি প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বাইরে কাজ করার সময়ও, "আপনাকে AI কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানার জন্যও প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার," তিনি বলেন।

"এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ অনেক ইউনিট এখনও তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে AI শেখায় না। এছাড়াও, স্কুলগুলিতে AI ব্যবহারের বিষয়ে একটি নীতি থাকা দরকার। যদি এমন কোনও নীতি না থাকে তবে এটি একটি বড় সমস্যা হবে, কারণ তখন শিক্ষার্থীরা প্রতারণা করছে নাকি সৃজনশীল তা নির্ধারণ করার কোনও ভিত্তি আমাদের কাছে নেই। এই দুটির মধ্যে সীমানা স্পষ্ট নয়। এছাড়াও, প্রভাষকদেরও AI সম্পর্কে শিক্ষিত করা দরকার, কেবল শিক্ষার্থীদের নয়," অধ্যাপক কস্টিন বাদিকা শেয়ার করেছেন।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা

ছবি: এনজিওসি লং

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখনও শ্রম প্রতিস্থাপন করতে পারে না

মৌলিক প্রশিক্ষণের উপর মনোযোগ দেওয়ার বিষয়ে একই দৃষ্টিভঙ্গি ভাগ করে নিয়ে, জাপান অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (JAIST) গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ অ্যাডভান্সড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে কর্মরত এবং ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ নলেজ অ্যান্ড সিস্টেমস সায়েন্স (IJKSS) এর প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক হুইন ভ্যান নাম একটি উদাহরণ দিয়েছেন যে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে, পদার্থবিদ্যা এবং ইলেকট্রনিক্সের পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে, অন্যদিকে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়, সমস্যাগুলি মোকাবেলা করার জন্য গণিত এবং যৌক্তিক চিন্তাভাবনার ভিত্তি থাকতে হবে।

বাস্তবে, স্কুলগুলিকে বর্তমান প্রযুক্তির প্রবণতা এবং উপলব্ধ সুযোগ-সুবিধার উপর ভিত্তি করে স্টেরিওটাইপিক্যাল অনুকরণ এবং নকশা প্রোগ্রামগুলি এড়িয়ে চলতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্নাতক হওয়ার পরপরই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে পুনরায় প্রশিক্ষণের প্রয়োজন ছাড়াই কাজের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি শিল্পে শ্রমবাজারের চাহিদা সম্পর্কে আরও জানাতে গিয়ে অধ্যাপক হুইন ভ্যান ন্যাম বেশ আশাবাদী বলে মনে হয়েছিল। তাঁর মতে, যদিও কাজের পরিপূরক হিসেবে শ্রম উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা যেতে পারে, তবুও এখন পর্যন্ত এটি যে ফলাফল অর্জন করেছে তা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। অতএব, কার্যকরভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালনার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে এখনও মানবিক দক্ষতা এবং জ্ঞানের প্রয়োজন।

"আমি বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীদের শ্রমবাজার নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার দরকার নেই যতক্ষণ না তারা খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক দক্ষতায় প্রশিক্ষিত এবং কাজের জন্য AI কার্যকরভাবে কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানে। মানব সম্পদের চাহিদা খুব বেশি হতাশাজনক নয়," বলেন অধ্যাপক হুইন ভ্যান ন্যাম।

একটি উজ্জ্বল দিক হল, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, সরকার সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত কর্মসূচি অনুমোদন করে, যার লক্ষ্য ২০৫০ সালের একটি দৃষ্টিভঙ্গি, যা লক্ষ্য নির্ধারণ করে যে ২০৩০ সালের মধ্যে, প্রশিক্ষণ সুবিধাগুলিতে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি বা তার বেশি ডিগ্রিধারী কমপক্ষে ৫০,০০০ কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের (পূর্বে তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় নামে পরিচিত) তথ্য অনুসারে, দেশীয় সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্রতি বছর ১০,০০০ প্রকৌশলীর প্রয়োজন, কিন্তু বর্তমান মানবসম্পদ ২০% এরও কম পূরণ করে।

টন ডাক থাং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডঃ ভো হোয়াং ডুই উদ্বোধনী ভাষণ দেন।

ছবি: এনজিওসি লং

টন ডুক থাং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডঃ ভো হোয়াং ডুই জানান যে ICCIES 2025-এ 36টি দেশের লেখকদের কাছ থেকে 200 টিরও বেশি প্রবন্ধ এসেছে, যার মধ্যে 115টি প্রবন্ধ সম্মেলনের কার্যবিবরণীর 4 খণ্ডে প্রকাশের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এই কার্যবিবরণী স্প্রিংগার স্কোপাস দ্বারা সূচিত কমিউনিকেশনস ইন কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্সেস (CCIS) সিরিজে প্রকাশ করবেন। সম্মেলনটি 25 জুলাই পর্যন্ত চলবে।

সূত্র: https://thanhnien.vn/hoc-nganh-cong-nghe-thoi-diem-nay-can-biet-gi-de-co-viec-lam-185250724105841551.htm